আজ ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ছবি: বন্যার সময় সাতকানিয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষিজমি

মাত্র ১৪ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক পেয়েছেন বন্যা পরবর্তী সহায়তা


অনলাইন ডেস্কঃ স্মরণ কালের সবচেয়ে বড় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ১ লাখ ১৫ হাজার ৪৪০ জন কৃষকের মধ্যে মাত্র আট হাজার (১৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ) কৃষক পেয়েছেন বন্যা পরবর্তী সহায়তা।

জানা গেছে, এসব কৃষককে ৪০ টন আমনের বীজ ধান দিয়েছে চট্টগ্রাম অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এর মধ্যে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় ১০ মেট্রিকটন, লোহাগাড়া উপজেলায় ১০ মেট্রিকটন ও চন্দনাইশ উপজেলায় কৃষকদের মাঝে ১০ মেট্রিকটন আমন ধানের বীজ বিতরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি কক্সবাজারের চকরিয়ায় ৫ মেট্রিকটন ও চকরিয়ায় ৫ মেট্রিকটন বীজধান সরবরাহ করা হয়েছে। প্রতিজন কৃষক পেয়েছেন ৫ কেজি করে আমনের বীজ।

আরও পড়ুন বন্যার তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড চট্টগ্রামের ‘সবজিভাণ্ডার’, শঙ্খচরে নিঃস্ব চাষী

সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থার দেয়া তথ্যানুযায়ী, উল্লেখিত ১ লাখ ১৫ হাজার কৃষকের ক্ষতি হয়েছে ১৮৪ কোটি টাকা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘মন্ত্রণালয় অগ্রিম বরাদ্দ দেয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত তিন উপজেলা এবং চকরিয়া ও পেকুয়ার কৃষকদের মাঝে বীজ সরবরাহ করা হয়েছে। বাকি কৃষকদের আগামী রবি মৌসুমে বোরো বীজ ধান এবং সরিষা, চীনা বাদামের বীজ দেয়া হবে।’

এবিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক ড. অরবিন্দ কুমার রায় বলেন, ‘আমরা ৫১৩ মেট্রিকটন বীজ দেয়ার জন্য মন্ত্রণালয়ে অনুরোধ জানিয়েছিলাম। যাতে করে অন্তত ৭৫ হাজার কৃষকের মাঝে বিতরণ করতে পারি। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে ৪০ মেট্রিকটন বীজধান পেয়েছি। যেসব এলাকার কৃষক সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেখানেই বীজ ধান বিতরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি সবজি চাষীরা যাতে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারে সেজন্য বীজ ও সার এবং আর্থিক প্রণোদনা দিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। যখন বরাদ্দ আসবে তখন বিতরণ করা হবে।’

আরও পড়ুন সহজ শর্তে কৃষি ঋণ পাবেন কৃষক

অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গতমাসের বন্যায় চট্টগ্রাম মহানগরের পাঁচলাইশ, ডবলমুরিং ও পতেঙ্গা এলাকার ৫ হেক্টর জমিতে লাগানো আউশ ধান, ২০ হেক্টর জমিতে লাগানো আমনের চারা ও ১৪০ হেক্টর জমিতে লাগানো সবজির ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। এছাড়াও ১৫ উপজেলায় ৩৩২ হাজার ৭১৯ হেক্টর জমিতে আউশ ধানের বীজতলা ৬ হাজার ৫৬৭ হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে যায়। এসব উপজেলায় মাসখানেক আগে ৫১ হাজার ১৩০ হেক্টর জমিতে লাগানো হয় আমনের চারা। এরমধ্যে ১৫ হাজার ৩৩০ হেক্টর জমিতে নতুন লাগানো চারার ক্ষতি হয়েছে। সবমিলিয়ে বন্যায় আউশ ধানে প্রায় ১৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা, রোপা আমনে প্রায় ৪০ কোটি ৭১ লাখ টাকা, আমনের বীজতলায় প্রায় ১১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ও সবজিতে ক্ষতি প্রায় ১১২ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছিল চট্টগ্রামের কৃষকদের।

এদিকে কক্সবাজারের চকরিয়ায় ৫৮৫ হেক্টর জমিতে আমনের বীজতলা, ৭ হাজার ৮শ হেক্টর জমিতে আমন ধান, ১ হাজার ১৬০ হেক্টর জমিতে আউশ ধান, ৩শ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন সবজি, ৫১২ হেক্টর জমিতে শরৎকালীন সবজির আবাদ করা হয়েছিল। প্রবল বর্ষণ ও জলাবদ্ধতায় চকরিয়ায় আবাদ করা ধান ও সবজির পুরোটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। টাকার অংকে এ অঞ্চলে প্রায় ৭৩ কোটি টাকার ফসল নষ্ট হয়েছে।

তথ্যসূত্র: সিভয়েস২৪


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর